শুক্রবার, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫
17 C
Dhaka

আত্মজীবনীঃ আহমদ ছফা

spot_img

ভিডিও

- Advertisement -

আহমদ ছফা, বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, ষাটের দশকের শুরু থেকে দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। একজন লেখক, সমালোচক, অনুবাদক, সম্পাদক এবং সমাজকর্মী হিসেবে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি একাধারে লেখক, ঔপন্যাসিক, কবি, চিন্তাবিদ ও গণবুদ্ধিজীবী। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

আহমদ ছফার লেখার মূল ভাবধারা ছিল প্রথাবিরোধিতা, স্পষ্টবাদিতা এবং স্বকীয় দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি “বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস”, “বাঙালি মুসলমানের মন”, “ওঙ্কার”, “গাভী বিত্তান্ত”, “পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ” ইত্যাদি বিখ্যাত রচনার জন্য পরিচিত।


“বাঙালি মুসলমানের মন” প্রবন্ধে তিনি বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের বিবর্তন বিশ্লেষণ করেছেন। “ওঙ্কার” উপন্যাসটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অনন্য বর্ণনা। “গাভী বিত্তান্ত” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির ব্যঙ্গাত্মক চিত্রায়ণ। “পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ” ঢাকা শহরের প্রেক্ষিতে প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের বর্ণনা।


ছফা প্রথাবিরোধী এবং বিতর্কপ্রবণ ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার এবং ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।


সূচিপত্র
জন্ম

শিক্ষা

সাহিত্য কর্ম

সম্পাদকীয় জীবন

বিতর্ক সমালোচনা

ব্যাক্তিগত জীবন

পুরস্কার

মৃত্যু

জন্ম


১৯৪৩ সালের ৩০শে জুন, চট্টগ্রাম জেলার গাছবাড়িয়ায় এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ ছফা । তাঁর পিতা ছিলেন হেদায়েত আলী এবং মা আসিয়া খাতুন। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন আহমদ ছফা।   

শিক্ষা

আহমেদ ছফার শিক্ষা জীবন শুরু হয় তার পিতার প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ গাছবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন জ্ঞানপিপাসু এবং বই পড়ার প্রতি তার ছিল অসাধারণ আগ্রহ।   ১৯৫৭ সালে তিনি নিজ গ্রামের নিত্যানন্দ গৌরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ছাত্রাবস্থায় তিনি কৃষক সমিতি-ন্যাপ বা তৎকালীন গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হন। মাস্টারদা সূর্যসেনের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি কয়েকজন বন্ধু মিলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইন উপড়ে ফেলেন। পরে গ্রেপ্তার এড়াতে কিছুকাল পার্বত্য চট্টগ্রামে আত্মগোপন করেন। ১৯৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম নাজিরহাট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু পরে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্থানান্তরিত হন এবং ১৯৬৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজ থেকে প্রাইভেটে বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমির পিএইচডি গবেষণা বৃত্তির জন্য আবেদন করেন এবং “১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব, বিকাশ, এবং বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে তার প্রভাব” বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কারণে তিনি তার গবেষণা সম্পন্ন করতে পারেননি।  ১৯৮৬ সালে তিনি গ্যেটে ইনস্টিটিউট থেকে জার্মান ভাষায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। এই ডিগ্রি তাকে পরবর্তী সময়ে গ্যেটের বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম “ফাউস্ট” অনুবাদে সাহায্য করেছিল।

সাহিত্য কর্ম

১৯৬০ সালে “কিশোর” পত্রিকায় ছোটগল্প প্রকাশের মাধ্যমে আহমদ ছফার সাহিত্য জীবনের সূচনা হয়। এরপর তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, অনুবাদ, সমালোচনা, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনী, রম্যরচনা – সাহিত্যের প্রায় সব শাখায়ই নিজের প্রতিভা খ্যাত করেছেন। ‘সূর্য তুমি সাথী’ (১৯৬৭) ছিল তার প্রথম উপন্যাস। ১৯৭১ সালে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির’ গঠন ও এর বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশ নেন। ৭ই মার্চ ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা’ হিসেবে প্রতিরোধ প্রকাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এপ্রিল মাসে কলকাতা চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে সেখান থেকে দাবানল নামের পত্রিকা সম্পাদনা করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর বাংলাদেশে ফিরে লেখালেখি করতে থাকেন। ‘বাঙালী মুসলমানের মন’ (১৯৭৩) বইটি তাকে রাতারাতি খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেয়। সমালোচক আনিসুজ্জামান এটিকে বাংলা ভাষায় রচিত অন্যতম সেরা নন-ফিকশন বই হিসেবে অভিহিত করেছেন।

ছফার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ভাষার ব্যবহারিক সতেজতা। তিনি বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যেতেন এবং বিভিন্ন সাহিত্যের উৎকৃষ্ট বর্ণনা সমূহ তার রচনাশৈলীকে এক অভিনবত্ব প্রদান করেছিল। সমালোচকরা তার জটিল চরিত্রায়ন, বাস্তববাদ, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সূক্ষ্মতার প্রশংসা করেছেন। ‘ওঙ্কার’ (১৯৭৫) উপন্যাসটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সেরা সাহিত্যিক অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। ‘গাভী বিত্তান্ত’ (১৯৯৫) দলীয় রাজনীতি ও দুর্নীতির ব্যঙ্গাত্মক উপস্থাপন। ‘পুষ্প বৃক্ষ ও বিহঙ্গ পুরাণ’ (১৯৯৬) প্রকৃতির সাথে তার আধ্যাত্মিক সংযোগের প্রতিফলন।

একজন লেখক হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি আহমদ ছফা একজন সক্রিয় সমাজকর্মীও ছিলেন। তিনি যুবক বয়সে অল্প সময়ের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির সাথে জড়িত ছিলেন। ঢাকার বস্তিতে বসবাসকারী শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি বিনামূল্যের স্কুলও খুলেছিলেন। তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে সম্প্রীতি কমিটি (১৯৯২-৯৪), তরঙ্গ (১৯৯৩-৯৬), নাগরিক শক্তি (১৯৯৫) ইত্যাদি সংগঠিত করেছিলেন।

আহমদ ছফা তিরিশটিরও বেশি বই রচনা করেছেন। ‘জাগ্রত বাংলাদেশ’ (১৯৭১) স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম গ্রন্থ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ (১৯৭২) প্রকাশের পর বিতর্ক ও আলোড়ন সৃষ্টি করে। ‘সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাস’ (১৯৭৯) এবং ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ (১৯৮১) তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ বইটিতে ছফা বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানি শাসকদের পক্ষে ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর বাঙালি হয়েছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় লেখকদের নিষ্ক্রিয়তা ও দ্বিধান্বিত ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। ছফা বলেন, বুদ্ধিজীবীরা সুবিধাবাদী এবং তাদের কোনো চিন্তা-কর্ম-উপদেশ সমাজের কাজে আসে না। আহমদ ছফার ভাষায়: “আগে বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানি ছিলেন, বিশ্বাসের কারণে নয়—প্রয়োজনে। এখন অধিকাংশ বাঙালি হয়েছেন—সেও ঠেলায় পড়ে।” তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীরা যা বলতেন, শুনলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না। এখন যা বলছেন, শুনলে বাংলাদেশের সমাজ-কাঠামো আমূল পরিবর্তন হবে না।

আহমদ ছফা  প্রধান গ্রন্থাবলী

  • প্রবন্ধ-

জাগ্রত বাংলাদেশ (১৯৭১)

বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস (১৯৭২)

বাংলা ভাষা: রাজনীতির আলোকে (১৯৭৫)

বাঙালি মুসলমানের মন (১৯৮১)

শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৮৯)

আনুপূর্বিক তসলিমা ও অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রসঙ্গ (১৯৯৪)

নিকট ও দূরের প্রসঙ্গ (১৯৯৫)

সঙ্কটের নানা চেহারা (১৯৯৬)

সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাস (১৯৭৯)

  • উপন্যাস-

ওঙ্কার (১৯৭৫)

একজন আলী কেনানের উত্থান-পতন (১৯৮৮)

মরণবিলাস (১৯৮৯)

অলাতচক্র (১৯৯৩)

গাভী বিত্তান্ত (১৯৯৫)

অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (আত্মজৈবনিক প্রেমের উপন্যাস,১৯৯৬)

পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ (১৯৯৬)

এছাড়াও অনুবাদ গ্রন্থ ফাউস্ট(১৯৯৬) এবং, সম্পদনা করেছেন, যদ্যপি আমার গুরু (১৯৯৮)

সম্পাদকীয় জীবন

আহমদ ছফা কেবল একজন বিখ্যাত লেখকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সম্পাদকও। সাহিত্য জীবনের শুরু থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি অনেক সংবাদপত্র, সাপ্তাহিক এবং মাসিক ম্যাগাজিনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি ‘কৃত্তিবাস’, ‘দেশ’, ‘সাপ্তাহিক বাংলা’, ‘অঞ্জলি’ ইত্যাদি খ্যাতনামা পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার সম্পাদনায় এই পত্রিকাগুলো বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিতর্ক সমালোচনা

আহমদ ছফা, বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, ইতিহাসবিদ এবং অনুবাদক। তার সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি, বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হিসেবেও পরিচিত ছিলেন আহমদ ছফা। তিনি ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি ও নিয়মকানুনের বাইরে জীবনযাপন করতেন। তার দীর্ঘ চুল, অগোছালো পোশাক এবং অপ্রচলিত আচরণ তাকে সমাজের রক্ষণশীল মানুষদের কাছে বিতর্কিত করে তুলেছিল। ছফা প্রায়শই মদ্যপান করতেন এবং নারীদের সাথে তার সম্পর্ক ছিল উন্মুক্ত এবং বিতর্কিত।

আহমদ ছফা কোন বিষয়ে স্পষ্টবাদিতা থেকে বিরত থাকতেন না। তিনি সমাজের ব্যায়াম, রাজনীতি, ধর্ম এবং সাহিত্য সম্পর্কে নিজের মতামত নির্ভীকভাবে প্রকাশ করতেন। তার স্পষ্টবাদিতা প্রায়শই তাকে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছিল।

আহমদ ছফার হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা নাসরীন এবং আরও কয়েকজন সাহিত্যিকের সাথে তিক্ত বিতর্ক হয়েছিল। এই বিতর্কগুলো সাহিত্য জগতে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল।

একজন খ্যাতিমান লেখক হওয়া সত্ত্বেও ছফা জীবনের বেশিরভাগ সময় অর্থনৈতিক কষ্টের মধ্যে কাটিয়েছেন। তিনি নিয়মিত কাজ করতেন না এবং অর্থ ব্যয় করতে অত্যন্ত উদার ছিলেন। ফলে তাকে প্রায়শই ঋণের ভারে দাবিয়ে রাখত। ১৯৮০ সালে ছফা লিবিয়ার স্বৈরাচারী শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির রচিত ‘দ্য গ্রিন বুক’-এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এই ঘটনা সমালোচকদের কাছে তার বিচার-বিবেচনার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।

ব্যাক্তিগত জীবন

আহমদ ছফার ব্যক্তিগত জীবন ছিল বহুমুখী ও রহস্যঘেরা। আহমেদ ছফা সারাজীবন অবিবাহিত ছিলেন। তার অবিবাহিত থাকার কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত আছে। কেউ কেউ মনে করেন, তার জীবনে একাধিক প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণেই তিনি বিবাহিত হননি। আবার কেউ কেউ মনে করেন, সাহিত্যকর্মের প্রতি নিরঙ্কুশ মনোযোগ দেওয়ার জন্যই তিনি বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হননি।

আহমেদ ছফার জীবনে কয়েকজন নারীর সাথে প্রণয় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শামীম শিকদার ও সুরাইয়া খানম। শামীম শিকদার ছিলেন একজন অভিনেত্রী এবং সুরাইয়া খানম ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী।

আহমেদ ছফা ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী’ (১৯৯৬) নামে একটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস রচনা করেন। এই উপন্যাসে তিনি শামীম শিকদার ও সুরাইয়া খানমের সাথে তার সম্পর্কের আলোচনা করেছেন। তার অবিবাহিত থাকা, একাধিক প্রেমের সম্পর্কসহ তার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এই উপন্যাস।  

পুরস্কার

আহমদ ছফা লেখক শিবির পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রদত্ত সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি মনে করতেন, এই পুরস্কারগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্বাধীন চিন্তাভাবনার প্রকাশ সীমাবদ্ধ করে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, একজন লেখকের সাহিত্যকর্মই তার সর্বোচ্চ পুরস্কার। যা কোন সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক পুরস্কারের উপর নির্ভরশীল নয়।

তবে আহমদ ছফা ইতিহাস পরিষদ পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। সম্ভবত এই পুরস্কার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল অথবা ইতিহাসের প্রতি আহমদ ছফার নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। আহমদ ছফা ২০০২ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। এই পদক বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার এবং সাহিত্যে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।  

মৃত্যু

আহমদ ছফা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। ২০০১ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়ে ওঠে। ২৮ জুলাই ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ২৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান’-এ তাকে সমাহিত করা হয়। 

- Advertisement -
spot_img

আলোচিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

ভিডিও