বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অমর নাম জহির রায়হান। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের মাধ্যমে আমরা বেশিরভাগ মানুষই তার সাথে পরিচিত। কিন্তু জহির রায়হান কেবল একজন ঔপন্যাসিকই নয়, একাধারে তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক।
নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বিষয় হিসেবে থাকা ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি ব্রিটিশ শাসনামলে বাংলার কৃষকদের শোষণ ও নির্যাতনের এক বেদনাদায়ক চিত্রিউঠে এসেছে। জহির রায়হানের সাহিত্যকর্ম কেবল বিনোদনমূলকই না, বরং সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে নীতিশিক্ষা ও আত্মসচেতনতা বোধ জাগ্রত করে।
‘জীবন থেকে নেওয়া’, ‘বেহুলা’, ‘সুতপার ঈশ্বর’ জহির রায়হানের নির্মিত কিছু বিখ্যাত চলচ্চিত্র। ‘স্টপ জেনোসাইড’ তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির উপর পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের জীবন্ত প্রমাণ তুলে ধরেছেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে জহির রায়হানের অবদান ছিল অসামান্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন ও আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
মাত্র ৩৭ বছরের জীবনে জহির রায়হান বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র জগতে এক অম্লান খ্যাতি অর্জন করেছেন। বাংলার নবজাগরণে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জহির রায়হান এর জীবন এক নজরে | |
নাম: জহির রায়হান পিতা: মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ স্ত্রী: সুমিতা দেবী, সুচন্দা সন্তান: সুমিতার সাথে দুই পুত্র, যার মধ্যে বিপুল রায়হানঅনল রায়হান সুচন্দার সাথে দুই পুত্র, যার মধ্যেঅপু রায়হানতপু রায়হানপরিবার: শহীদুল্লাহ কায়সার (ভাই)নিখোঁজ: ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২ | শিক্ষা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেশা: লেখক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার। পুরস্কার ও সম্মাননা: একুশে পদক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার আদমজী সাহিত্য পুরস্কার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার |
জন্ম:
ফেনীর মাজুপুর গ্রামে, ১৯৩৫ সালের ১৯শে আগস্ট, আট সন্তানের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন জহির রায়হান। মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ও সৈয়দা সুফিয়া খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান তিনি। জন্মনাম ছিল আবু আবদাল মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ, ডাকনাম জাফর। পিতার কলকাতার একটি আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা চাকরির সুবাদে সপরিবারে কলকাতায় স্থায়ী হন। ১৯৪৭ সালের ভাগাভাগির পর পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসেন।
শিক্ষা:
১৯৪০ সালে জহির রায়হান কলকাতা মডেল স্কুলে ভর্তি হয়ে তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ার পর তিনি মিত্র ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। দেশ ভাগের পর তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। স্থানীয় আমিরাবাদ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু লেখালেখির টানেই লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি নিবিড় হয়ে যান সাহিত্য সাধনায়।
ব্যক্তিগত জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে জহির রায়হান দু’বার বিয়ে করেছেন। ১৯৬১ সালে প্রথমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন চিত্রনায়িকা সুমিতা দেবীর সাথে। এই সংসারে অনল রায়হান ও বিপুল রায়হান নামে দুই পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে সুমিতা দেবীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদের পর ১৯৬৮ সালে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সুচন্দাকে বিয়ে করেন তিনি। এই দ্বিতীয় সংসারে জন্ম নেয় তাঁর আরও দুই সন্তান- অপু ও তপু।
উল্লেখ্য, জহির রায়হানের বড়ভাই ছিলেন প্রয়াত লেখক শহীদুল্লাহ কায়সার। এই শহীদুল্লাহ কায়সারই জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শমী কায়সারের পিতা।
যদিও ব্যক্তিগত জীবন সুখের সমুদ্রে দুর্ঘটনায় ভরপুর ছিল, তবুও স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার নিয়ে তার এক সুন্দর অধ্যায় ছিল। বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছেদ ও দূরত্বের ফলে পরিবারের প্রতি মমতা, দায়িত্ববোধ এবং স্নেহ তাঁর লেখায় ও চলচ্চিত্রেও ফুটে উঠেছিল।
কর্মজীবন
উপমহাদেশের প্রথম রঙিন সিনেমার নির্মাতা:
বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে জহির রায়হান একটি অবিস্মরণীয় নাম। আধুনিক বাংলা উপন্যাসের ধারায় তিনি এক সূচনাপুরুষ। মাত্র আটটি উপন্যাস লিখে তিনি বাংলা সাহিত্যে অনন্য স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর রচনায় ফুটে ওঠে জীবনের বাস্তব চিত্র। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত তাঁর সেরা উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ গ্রামের প্রান্তিক মানুষের জীবনযুদ্ধের কাহিনী অসাধারণ সুন্দর ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘বরফ গলা নদী’ উপন্যাসে শহরের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প বলেছেন তিনি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন তাঁকে দু’টি উপন্যাস রচনায় অনুপ্রাণিত করে, ‘আরেক ফাল্গুন’ ও ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’।
কৈশোর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলিতে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন জহির রায়হান। সাংবাদিকতার সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় এসব নিয়ে বিস্তারিত লিখতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়াকালীন ছাত্র সংসদের নেতা ছিলেন তিনি।
চলচ্চিত্রের প্রতি ছোটবেলা থেকেই তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বিভিন্ন নাট্যকর্মশালায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। সিনেমার প্রতি ভালোবাসায় কলকাতার একটি চলচ্চিত্র বিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু দশ মাসের কোর্সের মধ্যে ছয় মাসেই দেশে ফিরে আসতে হয়।
১৯৫৭ সালে উর্দু সিনেমা ‘জাগো হুয়া সাবেরা’র সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন জহির রায়হান। ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক থাকাকালীনই প্রথম স্ত্রী সুমিতা দেবীর সাথে পরিচয় হয়। ১৯৬১ সালে ‘কখনো আসেনি’ ছবি দিয়ে পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু তাঁর। ১৯৬৪ সালে নির্মান করেন উপমহাদেশের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সংগম’। বাংলাদেশের প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ প্রযোজনা করেন তিনি। ব্যবসায়িক, অব্যবসায়িক ও প্রামাণ্যচিত্র সহ মোট ১২টি ছবি নির্মাণ করেছেন জহির রায়হান। ‘বেহুলা’ ছবির মাধ্যমে নাট্যকার রাজ্জাক চলচ্চিত্র জগতে সুপরিচিত হন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ঝড়ের মতো বয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের মনে। সেই আন্দোলনের জ্বালা আর জয়গানই ১৯৭০ সালে সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন জহির রায়হান তার চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’-তে। এটিই ছিল চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সবচেয়ে সেরা সৃষ্টি। মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা, সংগ্রাম ও জয়গানকে এতো মর্মস্পর্শী, এতো গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য ‘জীবন থেকে নেয়া’ এক অনন্য উদাহরণ।
সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তিরাও মুগ্ধ হয়েছিলেন। সত্যজিত রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, তাপন সিংহের মতো বিখ্যাত পরিচালকরা ‘জীবন থেকে নেয়া’-র প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন।
একজন সাহিত্যিকের মুক্তিযুদ্ধ
পূর্ব পাকিস্তানে যেসব রাজনৈতিক আন্দোলন চলছিল, জহির রায়হান সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই বাঙালি জাতির ওপর নির্যাতন দেখে বেড়ে ওঠেন তিনি। এসব অভিজ্ঞতা তিনি সাবলীল ও সুন্দরভাবে তাঁর লেখা ও সিনেমায় ফুটিয়ে তুলেছেন। সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত না থাকলেও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সব আন্দোলনে তিনি সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালান। ঐতিহাসিক ২১শে ফেব্রুয়ারির আমতলা সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে দেয়। এই জেলেই ভাষা আন্দোলন নিয়ে তিনি লিখেন তাঁর অমর উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুন’।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানেও তিনি যোগ দেন। এ সময় আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন অনেক পত্রিকায় নিবন্ধ ছাপা হয়। ভাষা আন্দোলন নিয়ে তাঁর নির্মিত ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্যাতের চিত্র সরাসরি ফুটিয়ে তোলা হয়। তাঁর এমন সাহিত্য ও সিনেমার কারণে তিনি পাকিস্তানি শাসকদের কালো তালিকায় নাম লেখান।
‘স্টপ জেনোসাইড’ ডকুমেন্টারি
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি কলকাতায় চলে যান। যুদ্ধে সরাসরি অংশ না নিলেও দেশের স্বাধীনতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কলকাতা থেকে শুরু করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রচারণা। ভারত ও অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে থাকেন। চরম আর্থিক অনটনের মধ্যেও তিনি লেখালিখি ও সিনেমা থেকে উপার্জিত অর্থ মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে দান করেন। বিভিন্ন ফটোস্ট্যাট ও সিনেমা তৈরি করে বিশ্বব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের প্রচারণা চালান।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি প্রচার মাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল। এসব দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাঁর ‘স্টপ জেনোসাইড’ ডকুমেন্টারি বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলে। এই ডকুমেন্টারির মাধ্যমেই বিদেশি মানুষ জানতে পারে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নৃশংসতার কথা।
অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এক মহাকাব্য: রহস্যময়ী নিখোঁজ
১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন জহির রায়হান। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হতে না হতেই অপারেশন সার্চলাইটের সময় আপন ভাই, জনপ্রিয় লেখক শহীদুল্লাহ্ কায়সারকে রাজাকার-আলবদর বাহিনী অপহরণ করে নেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি নানাভাবে নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে থাকেন তিনি।
১৯৭২ সালের ২৮ শে জানুয়ারির সকালে একটি রহস্যময় ফোনকল আসে জহির রায়হানের কাছে। ফোনে জানানো হয়, তার ভাই মিরপুর ১২ নং এলাকার একটি আবাসিক এলাকায় আটক রয়েছেন। এই খবরে দেরি না করে ভাইয়ের খোঁজে মিরপুরে রওনা দেন তিনি, আর ফিরে আসেননি।
জহির রায়হানের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা ধরনের গুজব। কেউ বলেন, তিনি খোঁজের দল নিয়ে মিরপুরে যান। সেখানে ছদ্মবেশে থাকা কিছু পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সদস্য তাকে গোপনে গ্রেফতার করে হত্যা করে লাপতা করে দেয়। তার ছোট ভাই হাবিবের মতে, তিনি জহির রায়হানকে মিরপুর থানায় নামিয়ে দেন। এরপর আর তাকে দেখা যায়নি। এমনও শোনা যায়, মিরপুর থানা থেকে জহির রায়হানকে জানানো হয় যে, কিছু পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকার মিরপুর ১২ নম্বরে লুকিয়ে আছে। সেখানে যাওয়ার আগে প্রথমে ফোনটির সত্যতা যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু তিনি রেগে থানা থেকে চলে যান। আর পাওয়া যায় নি। এছাড়াও এই বিষয়ে আরো অনেক গুজব ছড়িয়েছে সময়ে সময়ে।
তার মৃতদেহ কখনো পাওয়া যায়নি। তার নিখোঁজের ঘটনায় কোন তদন্তও হয়নি।
১৯৭২ সালের ৩০শে জানুয়ারি তার মৃত্যু তারিখ ঘোষণা করা হয়। সেদিন রহস্যময় ফোনকলটি বিশ্বাস না করে বাড়িতে থাকলে হয়তো এত অল্প বয়সেই এই কিংবদন্তিকে হারাতে হতো না বাংলাদেশকে। আমরা পেতাম আরো ক্লাসিক উপন্যাস ও চলচ্চিত্র।
জহির রায়হানের জীবন ও কাজ স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু তার রহস্যময় নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা আজও একটি অমীমাংসিত প্রশ্ন হয়ে থেকে গেছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা:
- ১৯৬৪: হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য আদমজী সাহিত্য পুরস্কার
- ১৯৬৫: কাচের দেয়াল চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্র বিভাগে নিগার পুরস্কার
- ১৯৭২: গল্প সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (মরণোত্তর)
- ১৯৭৭: শিল্পকলায় (চলচ্চিত্র) অবদানের জন্য একুশে পদক (মরণোত্তর)
- ১৯৯২: সাহিত্যে অবদানের জন্য স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (মরণোত্তর)
- ২০০৫: হাজার বছর ধরে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (মরণোত্তর)
জহির রায়হান: রচনাবলী
উপন্যাস:
- শেষ বিকেলের মেয়ে (১৯৬০) – প্রথম উপন্যাস। প্রকাশক: সন্ধানী প্রকাশনী (রোমান্টিক প্রেমের উপাখ্যান)
- হাজার বছর ধরে (১৯৬৪) – আবহমান বাংলার গ্রামীণ জীবনের পটভূমিতে রচিত আখ্যান। (চলচ্চিত্ররূপ (২০০৫)
- আরেক ফাল্গুন (১৯৬৯) – বায়ান্নর রক্তস্নাত ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত কথামালা।
- বরফ গলা নদী (১৯৬৯) – প্রথম প্রকাশ: ‘উত্তরণ’ সাময়িকী। অর্থনৈতিক কারণে বিপর্যস্ত ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্ত পরিবারের অসহায়ত্ব গাথা।
- আর কতদিন (১৯৭০) – অবরুদ্ধ ও পদদলিত মানবাত্নার আন্তর্জাতিক রূপ এবং সংগ্রাম ও স্বপ্নের আত্মকথা।
- কয়েকটি মৃত্যু
- একুশে ফেব্রুয়ারি (১৯৭০)
- তৃষ্ণা (১৯৬২)
গল্পসমগ্র:
- সূর্যগ্রহণ – প্রথম গল্পগ্রন্থ (১৩৬২ বঙ্গাব্দ)
- ‘সোনার হরিণ
- “সময়ের প্রয়োজনে
- একটি জিজ্ঞাসা
- হারানো বলয়
- বাঁধ
- নয়াপত্তন
- মহামৃত্যু
- ভাঙাচোরা
- অপরাধ
- স্বীকৃতি
- অতি পরিচিত
- ইচ্ছা অনিচ্ছা
- জন্মান্তর
- পোস্টার
- ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি
- কতকগুলো কুকুরের আর্তনাদ
- কয়েকটি সংলাপ (১৯৭১)
- দেমাক
- ম্যাসাকার
- একুশের গল্প
অন্যান্য রচনা:
- পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ (প্রবন্ধ) – কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ‘পরিচয়’ সাহিত্যপত্রের বাংলাদেশ সংখ্যায় (জুলাই ১৯৭১) প্রকাশিত হয়।
- অক্টোবর বিপ্লব ও সোভিয়েত চলচ্চিত্র (প্রবন্ধ) – সোভিয়েত বিপ্লবের ৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক মহাবিপ্লব উদ্যাপন কমিটির (ঢাকা) স্মরণিকা ‘তরঙ্গ’-এ (নভেম্বর, ১৯৬৭) প্রকাশিত হয়।
- ওদের জানিয়ে দাও (কবিতা)
- জহির রায়হান রচনাবলি ১ম খণ্ড
- জহির রায়হান রচনাবলি ২য় খণ্ড
পত্রিকা সম্পাদনা:
- এক্সপ্রেস (ইংরেজি সাপ্তাহিক)
- প্রবাহ (বাংলা মাসিক)
চলচ্চিত্র:
সহকারী পরিচালক হিসেবে:
- জাগো হুয়া সাভেরা (১৯৫৯)
- এদেশ তোমার আমার (১৯৫৯)
- নবারুণ (১৯৬০)
- যে নদী মরুপথে (১৯৬১)
পরিচালক, প্রযোজক, লেখক ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে:
- স্টপ জেনোসাইড (১৯৭১)