মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

আত্মজীবনী : শেখ হাসিনা ওয়াজেদ

শেখ হাসিনা ওয়াজেদের জীবনী

(বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, বিখ্যাত বাঙালি রাজনীতিবিদ, এবং আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের নেত্রী) (২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ – অব্যাহত)

 

ঘড়িতে রাত ১১ টা ১০ মিনিট। অঙ্গ সংগঠনের জনাদশেক কর্মীর সঙ্গে বৈঠক শেষ করলেন। বললেন, অনেক রাত হয়েছে, এখন যাও, আর পারছি না। কর্মীদের মধ্যে যিনি নেতা বললেন, এই চলো আপা ঘুমাতে যাবে। কথাটা তার কানে পৌঁছালো। টিপ্পনী কেটে বললেন, এত সুখ তোমরা আমাকে দিয়েছ। এখন যেয়ে ফাইল নিয়ে বসতে হবে। অনেক ফাইল জমা আছে। কর্মীরা নিজেরাই যেন লজ্জা পেলেন।

 

- Advertisement -

গণভবনের রাস্তার দুপাশে গাছ, ফুলেরাও যেন ঘুমিয়ে গেছে। পুকুরটাও শান্ত। প্রকৃতি যেন বিশ্রামে। হয়তো সেটা দেখেই একজন কর্মী তার নেতাকে জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা আপা ঘুমায় কখন? এই প্রশ্নে সবাই যেন চমকে উঠলেন।যাকে নিয়ে এই চর্চা তাঁর নাম শেখ হাসিনা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সভাপতি। একজন আদর্শ মা। একজন স্নেহময়ী নানী, দারুণ দাদী।

 

শেখ হাসিনার চারপাশে যারা থাকেন, তারা তাঁর অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে নিজেরাই অবাক হয়ে যান। একে একে সবাই ক্লান্ত হয়ে যান, তখনও শেখ হাসিনা যেন ক্লান্তহীন এক কর্মময় মানুষ। কেউ বলেন, উনি পারেন কীভাবে। আর সবচেয়ে বেশি যেটা বলা হয়, শেখ হাসিনা ঘুমান কখন? নাকি তিনি জেগে থেকেই পাহারা দেন বাংলাদেশকে সব অমঙ্গল থেকে।

 

 

শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এর জীবন এক নজরে  
নামঃ শেখ হাসিনা
জন্মঃ ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭
বয়সঃ ৭৪ বছর
পিতাঃ শেখ মুজিবুর রহমান
মাতাঃ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
স্থানঃ টুঙ্গিপাড়া, পূর্ববঙ্গ, পাকিস্তান (বর্তমান টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, বাংলাদেশ) 
ভাইবোন:
১। শেখ রেহানা
২। শেখ রাসেল
৩। শেখ কামাল
৪। শেখ জামাল

নাতি-নাতনি:
সোফিয়া রেহানা ওয়াজেদ
স্বামী- এম এ ওয়াজেদ মিয়া (৯ মে ২০০৯)
ধর্মঃ ইসলাম
সন্তানঃ-
১। সজীব ওয়াজেদ জয়

২। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
পেশা: – বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী (১৯৯৬-২০০২ এবং ২০০৯-বর্তমান)
–  বাঙালি রাজনীতিবিদ

– আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের নেত্রী
রাজনৈতিক দলঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
শিক্ষাঃ

ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


কর্মজীবনঃ-  


-শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তার রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় চার দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী বিস্তৃত। 

-তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ ও ১৯৯১-১৯৯৫ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা এবং ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮১ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। 

জন্ম

শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তার পিতা। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব তার মা ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তিনি তার বাবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে ভীত হয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। ১৯৬৮ সালে, তিনি বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে বিয়ে করেন, যাকে তার বাবা তার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, সেইসাথে তার বাবার আটকের সময় সহিংসতার শীর্ষে তিনি তার দাদির কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর যখন তার পিতা এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য বিদ্রোহী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দ্বারা নিহত হন তখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ছিলেন না। তিনি তার স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। একজন পারমাণবিক পদার্থবিদ হিসাবে কাজ করছেন। ভারতে আশ্রয় পাওয়ার পর, তিনি ১৯৭৫ সালের শেষের দিকে নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরিত হন। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতীয় বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেন। হাসিনা ভারতে তার শাসনামলে রাজনীতিতে অংশ নেননি, তবে তিনি ভারতের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জির সাথে ভাল বন্ধুত্ব করেছিলেন।

 

১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১-এ আওয়ামী লীগের নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং তিনি ১৭ মে, ১৯৮১-এ পৌঁছান।

- YouTube -

 

শিক্ষা জীবনঃ

১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ওঠেন।

 

১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে গভর্নমেন্ট ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুননেসা সরকারি মহিলা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। বিয়ের কারণে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ছেদ পড়ায় তাকে অনার্স পাঠ স্থগিত রাখতে হয়। পরে ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

রাজনৈতিক কর্মজীবন

ছাত্র রাজনীতিঃ

স্কুলজীবনেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ১৯৬২-তে স্কুলের ছাত্রী হয়েও আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আজিমপুর গার্লস স্কুল থেকে তার নেতৃত্বে মিছিল গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে কলেজ ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবনের পথ চলা। ’৬৯-এর গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ও রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক হন।

 

মূলধারার রাজনীতিঃ

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাত্রিতে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলেও তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। পরবর্তী ছয় বছর লন্ডন ও দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাদের দুই বোনকে।

 

১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দীর্ঘ ছয় বছর পর যখন বাংলার মাটিতে পা দেন। লাখ লাখ মানুষ তেজগাঁও বিমানবন্দরে সমবেত হয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানায়। ১৯৮১ সালের ১২ জুন শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহনকে অবৈধ ঘোষণা করে এরশাদ-বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন শেখ হাসিনা। ১৯৮৩ সালে তিনি ১৫ দলের একটি জোট গঠন করেন। তার নেতৃত্বে দেশজুড়ে সামরিক শাসক এরশাদ-বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠায় ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ৩১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। চোখ বেঁধে তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

১৯৮৪ সালে তিনি আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের কংগ্রেসে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে ইয়াসির আরাফাতের আমন্ত্রণে তিউনেশিয়ায় ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার (PLO) সদর দফতর সফর এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি-প্রক্রিয়ার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।১৯৮৬-র সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালের ৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা পুনরায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন।

 

১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়। ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশন ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স নামে সংগঠনের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোয় অনুষ্ঠিত নারী নেত্রীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন বিশেষ অতিথি হিসেবে। ১৯৮৮ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের সপ্তম কংগ্রেসে তিনি পাঠ করেন ‘নিরস্ত্রীকরণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ। একই বছর যোগদান করেন বিশ্বশান্তি পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে প্রাগে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম বৈঠকে।

 

১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মিছিলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ ও বিডিআর এলোপাতাড়ি নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় অল্পের জন্য শেখ হাসিনার জীবন রক্ষা হলেও নিহত হন ৯ সাধারণ নেতা-কর্মী-সমর্থক। ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর আন্দোলনের জোয়ার ঠেকাতে সারাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং শেখ হাসিনাকে ধানমন্ডির বাসায় গৃহবন্দী অবস্থায় রাখা হয়। ৪ ডিসেম্বর জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত জনসভায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। এরশাদের পতন ঘটে।

 

১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সংসদ উপনির্বাচনের সময় সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালের ৭ মার্চ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০০ সংসদ সদস্য শহিদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গোলাম আযমকে গণ-আদালতে বিচারের দাবির সঙ্গে একাত্ম ঘোষণা করেন। ১৯৯২ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল করে গোলাম আযমের বিচার করার প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯২ সালের ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

 

১৯৯২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি পরিষদের আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। ওই একই বছর যোগদান করেন নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনে। ১৯৯২ সালে তিনি গৌতম বুদ্ধের কর্ম ও চিন্তাধারার ওপর অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সেমিনার উপলক্ষ্যে নেপাল এবং ওই একই বছর পাকিস্তানের করাচিতে অনুষ্ঠিত সার্ক দেশগুলোর পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দের সভায় যোগদান করেন। ১৯৯৩ সালে চীন সফর করেন শেখ হাসিনা।

 

১৯৯৩ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার সভায় গুলি ও বোমা হামলায় ৫০ জন আহত হন।

 

১৯৯৩ সালের জুন মাসে ভিয়েনার মানবাধিকারের ওপর দ্বিতীয় বিশ্ব কংগ্রেসের আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এনজিও সম্মেলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। ১৯৯৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে। একই বছর টোকিওতে অনুষ্ঠিত সোশিয়ালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সেমিনারে যোগদান করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে তিনি ‘ইস্টার্ন ভিশন ফেয়ার’র ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

 

১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতার সূতিকাগার জাতির পিতার ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাসভবনটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করে তা দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ট্রেন অভিযাত্রায় ঈশ্বরদী ও নাটোরে ব্যাপক সন্ত্রাস, গুলি, বোমা হামলা ও তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশসহ আহত হন শতাধিক। ১৯৯৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা মিন্টো রোডের বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবন ত্যাগ করেন। ১৯৯৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ থেকে আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি বিরোধী দলের সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করেন। তার নেতৃত্বে খালেদা সরকারের ভোট কারচুপি ও জনগণের ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে তীব্র আন্দোলন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির একদলীয় নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে খালেদা সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়। ১৯৯৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

 

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৬-২০০১ পাঁচ বছর ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল সময়। এ সময়কালের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, ১৯৯৮ সালে যমুনা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা, ১৯৯৯ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করাসহ অনেক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়। এ সময় দ্রব্যমূল্য ছিল ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্যে সার, বীজ সরবরাহ এবং সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের ফলে দেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। প্রায় ২৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। প্রথম মুঠোফোন (মোবাইল) প্রযুক্তির বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং উল্লেখযোগ্য হারে কর সুবিধা প্রদান করা হয়। বেসরকারি খাতে টেলিভিশন চ্যানেল অপারেট করার অনুমতি প্রদান করে আকাশ সংস্কৃতিকে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। পিতার সাথে মাতার নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। কম্পিউটার আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসকরণের দ্বারা সাধারণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সুযোগ অবারিত করে দেওয়া হয়।

 

১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করা হয়। ১৯৯৬ সালে রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রথমবারের মতো ‘ক্ষুদ্র ঋণ সংক্রান্ত বিশ্ব মহাসম্মেলন’-এ কো-চেয়ারপারসন হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন তিনি।

 

১৯৯৭ সালের ৬ ও ৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন।

 

১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডকে নিয়ে গঠিত উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা ফোরাম ‘বিমসটেক’-এ অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই জার্মানির হামবুর্গে ইউনেস্কোর উদ্যোগে আয়োজিত পঞ্চম আন্তর্জাতিক বয়স্ক শিক্ষা সম্মেলনে যোগদান এবং সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শেখ হাসিনা। 

 

১৯৯৭ সালের ২৮ অক্টোবর লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সে ‘ভোট কারচুপি ও সমাধান’ প্রসঙ্গে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। তার এই ভাষণ রাষ্ট্র ও সমাজবিজ্ঞানীদের কাছে বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে তেহরানে অনুষ্ঠিত ইসলামি ঐক্য সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ওই একই বছরে যুক্তরাজ্যের এডিনবরায় কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন, মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন তিনি।

 

১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১৪ হাজারেরও বেশি মহিলা জনগণের সরাসরি ভোটে সদস্য ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘শান্তিবাহিনী’ প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন। সেই সাথে ওই বাহিনীর প্রায় ২ হাজার সশস্ত্র সদস্যও গোপন অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে অস্ত্র সমর্পণ করে ফিরে যান স্বাভাবিক জীবনে।

 

১৯৯৮ সালের মে মাসে মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে ভারত ও পাকিস্তান উপর্যুপরি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ এশিয়া; তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এ উপমহাদেশজুড়ে। সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমন ও পারমাণবিক অস্ত্র-প্রতিযোগিতা থেকে তাদের বিরত রাখার উদ্দেশে ১৯৯৮ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও পাকিস্তানে ঝটিকা সফর করে উভয় দেশকে অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। শান্তির দূত শেখ হাসিনার এ সাহসী উদ্যোগকে বিশ্বসম্প্রদায় স্বাগত জানান এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন।

 

১৯৯৮ সালের প্রলয়ংকরী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪২ লাখ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষকে প্রায় ৯ মাস বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষিঋণ আদায় এক বছর বন্ধ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক শীর্ষ সম্মেলন।

 

১৯৯৯ সালের ১৫মে ‘হেগ শান্তি সম্মেলনের শতবার্ষিকী’ অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।

 

শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বাঙালি জাতির গর্ব ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।

 

২০০০ সালে আফ্রো-এসিয়ান ল’ ইয়ার্স ফেডারেশন প্রদত্ত ‘পারসন অফ দ্যা ইয়ার’ নির্বাচিত হন তিনি। ২০০০ সালে মুফতি হান্নান গং তাকে হত্যার চেষ্টা করে কোটালিপাড়ায়। ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভিষেক টেস্ট ম্যাচের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ওইদিনই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের প্রথম এশীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন তিনি।

 

২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন। ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনী কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।

 

২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিলভার জুবলি সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড গুড গভরন্যান্স : দি জার্নালিস্ট রুল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা।

 

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তাকে এবং তার অনুগামীদের হত্যার উদ্দেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণীতে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। কানের পর্দা ফেটে গিয়ে আহত হন শেখ হাসিনা।

 

২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর নিউইয়র্কের লার্গোডিয়া কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সার্বজনীন গণসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। ২০০৪ সালের ২৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে দি কাউন্সিল অব ওম্যান ওয়ার্ল্ড লিডার্স আয়োজিত ‘শেপিং দ্য ফিউচার গ্লোবাল পলিসি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল ম্যানিলায় অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়ান পার্লামেন্টস ফর পিস আয়োজিত সিনিয়র অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের সভায় যোগ দেন।

 

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে বিএনপি-জামাতের নীলনকশার নির্বাচন বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বঘোষিত প্রধানের পদ থেকে ইয়াজউদ্দিনের পদত্যাগ। জরুরি অবস্থা ঘোষণা। ড. ফখরুদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে অপসারণের উদ্দেশ্যে মাইনাস টু ফর্মুলা দেওয়া হয় মহলবিশেষের ইঙ্গিতে। শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে গেলে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রত্যয় ঘোষণা করলে ভীত-সন্ত্রস্ত সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। ৭ মে তারিখে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। জরুরি আইনের বাধা উপেক্ষা করে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নেমে এসে তাকে স্বাগত জানায়। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে যৌথবাহিনীর একটি দল কোনো ধরনের সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই দুদফায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সুধা সদনস্থ বাসভবনে প্রবেশ করে। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ১২ জুন চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গমন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। চিকিৎসা শেষে স্বদেশে ফিরে আসেন তিনি। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেরাটনের উইন্টার গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার উপস্থাপন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

 

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬৪টি আসন লাভ করে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ শুরু, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে জাতির কলঙ্কমুক্তি ও বিডিআর বিদ্রোহের শান্তিপূর্ণ সমাধান। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ ও বিশ্বমন্দা মোকাবিলা। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা, কৃষিতে বিপুল ভর্তুকি, ধানের বাম্পার ফলন, সর্বকালের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, সর্বোচ্চ রফতানি আয় বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশে উন্নীত, নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন। প্রতিবছর বিনামূল্যে বই প্রদান, প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে সফল পাবলিক পরীক্ষার পদ্ধতি প্রচলন ,বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০০০০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ, লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা, শিল্প-কারখানায় নতুন করে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ প্রদান শুরু, কর্মসংস্থান ও হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, খোলাবাজারে ৪২ টাকা কেজির চাল জনপ্রতি ৫ কেজি ২৪ টাকা দরে বিতরণ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু, সফলভাবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান।

 

ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের সূচনা, পরপর দুবছরে বাংলাদেশের দুই তরুণের এভারেস্ট জয়, উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশেই প্রথম সোনালি আঁশ পাটের জিন প্রযুক্তির আবিষ্কার। সম্ভাবনার স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত, বন্ধ পাটকল চালু, শিল্পায়নের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ, গার্মেন্ট শ্রমিকদের পে-স্কেল পুনর্নির্ধারণ।

 

সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বর্ধিত বেতন স্কেল কার্যকর করা, শিল্প পুলিশ বাহিনী গঠন, শিল্পে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ এগিয়ে চলছে, তিস্তা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন, রাজধানী ঢাকা একটি বিশেষ অংশে আধুনিক ও দৃষ্টিদন্দন হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন , ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে কুড়িল-বিশ্বরোড ফ্লাইওভার, মিরপুর-বনানী ফ্লাইওভার, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারসহ একাধিক উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভার নির্মাণ ,বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূমিকা পালন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।

 

২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে ন্যামের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। ২০১০ সালে মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান অ্যান্ড স্যাশ বাংলাদেশকে ‘সম্মুখের সারির বাজার’ এবং ‘একাদশ উদীয়মান’ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল ২৯১-১ ভোটে পাস হয়। সংশোধনীতে ’৭২-এর মূলনীতি পুনর্বহাল, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার প্রথা চালু, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি, নারীদের জন্য ৫০ আসন সংরক্ষণ, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ইটলসের রায়ে বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল সমুদ্রজয় উদ্‌যাপন নাগরিক কমিটি কর্তৃক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনায় বরিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ১৯ জুন ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থ ও এর ইংরেজি সংস্করণ ‘The Unfinished Memoires’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ১০ আগস্ট দেশের প্রথম ডিজিটাল কোরআন শরিফ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো কর্তৃক ‘কালচারাল ডাইভারসিটি পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর টেলিটকের থ্রিজি প্রযুক্তি উদ্বোধন করেন তিনি। ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাধারণ অধিবেশনের সভায় ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব পাস হয়। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসাধারণের জন্য খুলে দেন স্বপ্নের কুড়িল ফ্লাইওভার। ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশি পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহায়তায় বিজ্ঞানী মাকছুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল গবেষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয় যুগান্তকারী এ সফলতা।

 

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর পাবনার ঈশ্বরদীতে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর রাজধানীতে নির্মিত দেশের বৃহত্তম ফ্লাইওভার ‘মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সেতু’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকার ‘সর্বদলীয় সরকার’-এর প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামাত নেতা একাত্তরের ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধী কসাই আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।

 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। ২৩ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ি আর ঝাউবীথির বুক চিরে গড়ে তোলা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ মার্চ বাংলাদেশ গড়ে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার বিশ্ব রেকর্ড।

 

২৩ এপ্রিলে আগামী তিন বছরের (২০১৫-১৭) জন্য জাতিসংঘের ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। ২৪ মে চার দিনের জাপান সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫ মে টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কার্যালয়ে শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশকে ৬০ হাজার কোটি ইয়েন (৬০০ কোটি ডলার) সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় জাপান।  ৬ জুন ছয় দিনের সফরে চীন গমন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৯ জুন বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াংয়ের শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই সফরে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দুটি চুক্তি, দুটি সমঝোতা স্মারক এবং দুটি বিনিময়পত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশে একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুতল বিশিষ্ট টানেল নির্মাণ। ৭ জুলাই নেদারল্যান্ডসের হেগের সালিশি আদালতের ঐতিহাসিক রায়ে ভারতের সাথে বিরোধপূর্ণ ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ৮ জুলাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে রায়টি প্রকাশ করে। ২১ জুলাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের বিশেষ আমন্ত্রণে গার্ল সামিট-১৪-তে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য গমন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে  যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। লন্ডন থেকে ফেরার সময় বিজনেস ক্লাস থেকে বেরিয়ে এসে উড়ন্ত বিমান যাত্রীদের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বভাবসুলভ হাসিমাখা মুখে এগিয়ে এসে কুশলবিনিময় করেন, সবার সঙ্গে ছবি তুললেন এবং শিশুদের কোলে নিয়ে আদর করেন। ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফররত জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সাথে গণভবনের শিমুল কনফারেন্স হলে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য আগামী পাঁচ বছরে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল-২০১৪’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। প্রধান বিরোধী দল জাপাসহ অন্য বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে বিলের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়ে কোনোরকম বিরোধিতা ছাড়াই বিভক্তি ভোটে নির্বিঘ্নে বিলটি পাস করেন। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে নিউইয়র্ক গমন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন তিনি। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশন এবং ২৯তম বিশেষ অধিবেশনের ক্রেডেনশিয়াল কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে।

 

৭ মে ২০১৫ সালের ভারতে লোকসভায় পাশকৃত সীমান্তযুক্তি বিল অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহল এবং ভারতে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল বিনিময় করা হয় দেশরত্ন শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায়। এত শান্তিপূর্ণ উপায়ে দু’টি দেশের মধ্যে এতগুলো ছিটমহল বিনিময়ের নজির বিশ্বে দ্বিতীয়টি নেই।

 

১৪ অক্টোবর, ২০১৬ ইং চীনের সাথে উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

 

০৮ এপ্রিল, ২০১৭ ইং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হায়দরাবাদ হাউজের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রতিরক্ষা খাতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তিসহ ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে আরো ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণাও এসেছে বৈঠক থেকে।

 

পুরষ্কার ও অর্জনসম্মূহ 

১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান সূচক ‘ডক্টর অব লজ’ উপাধি প্রদান করে।

 

১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জাপানের বিখ্যাত ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করে।

 

১৯৯৭ সালের ২৫ অক্টোবর গ্রেট ব্রিটেনের ডান্ডি অ্যাবার্তে বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমার্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিবারেল আর্টস’ ডিগ্রি প্রদান করে।

 

১৯৯৭ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি শান্তি, গণতন্ত্র ও উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য স্থাপনে অনন্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ হাসিনাকে ‘নেতাজী মেমোরিয়াল পদক ১৯৯৭’ প্রদান করে।

 

১৯৯৭ সালে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের রোটারি ফাউন্ডেশন শেখ হাসিনাকে ‘পল হ্যারিস ফেলো’ নির্বাচিত করে এবং ১৯৯৬-৯৭ সালের সম্মাননা মেডেল প্রদান করে।

 

একই বছর লায়ন্স ক্লাবসমূহের আন্তর্জাতিক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ‘রাষ্ট্রপ্রধান পদক’-এ ভূষিত হন শেখ হাসিনা। (১৯৯৭)

 

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালের ফেলিক্স হুফে বইনি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেন।

 

১৯৯৮ সালের ১২ এপ্রিল শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে ‘মাদার তেরেসা পদক’ প্রদান করে নিখিল ভারত শান্তি পরিষদ।

 

নরওয়ের রাজধানী অসলোয় অবস্থিত মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালের ‘এম. কে. গান্ধী’ পদক প্রদান করে।

 

১৯৯৯ সালে ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (FAO) কর্তৃক ‘সেরেস পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

১৯৯৯ সালের ২০ অক্টোবর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অসাধারণ অবদানের জন্য ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয