শুক্রবার, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫
22 C
Dhaka

আমগাছ পরিবেশের জন্য কতটা জরুরী?

spot_img

ভিডিও

- Advertisement -

আম বাংলাদেশে অতি পরিচিত একটি ফল। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই এই ফলের গাছ পাওয়া যায়। তবে আমরা নানান রকম আর জাতের আম নিয়ে এতটাই মেতে থাকি যে, আম গাছের গুরুত্বের কথাই ভুলে যাই। সুস্বাদু ফল আম ছাড়াও যে এই গাছ আমাদের পরিবেশের জন্য কতটা জরুরী তাই জানবো আজ-

 

বর্তমান সময়ের দূষণ কমাতে গাছের ভূমিকা অনেক বড়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের যে- কোন বিকল্প নাই; তা আমরা প্রায় সবাই জানি। কিন্তু এটা আমরা অনেকেই জানি না যে, অন্যান্য অনেক গাছ থেকে পরিবেশের জন্য আমগাছ অনেক বেশী কার্যকরী। তাই অনেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আমগাছকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছেন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা বলছেন, দূষিত বায়ুর মধ্যেও আমগাছের টিকে থাকার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি। তারা মেহগনি, পেয়ারা, কাঁঠাল ও আমগাছের দূষণ–সহিষ্ণুতা নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন, সবচেয়ে কম দূষণ সহ্য করতে পারে মেহগনি। আর সবচেয়ে বেশি দূষণ সহ্য করতে পারে আমগাছ।


আসলে বায়ুদূষণ এখন আর বৈশ্বিক সমস্যা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ সমস্যা। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে থাকছে রাজধানী ঢাকা। তাই এই গবেষণাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন নগরবিদেরা। কারণ, এতে গবেষকরা আম গাছ কিভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা পালন করে তাই দেখিয়েছেন।


পদার্থরাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আমের পাতায় থাকা পানির পরিমাণ অন্য তিনটি প্রজাতির প্রতিটির পাতায় থাকা পানির চেয়ে বেশি। আর যে গাছের পাতায় পানি বেশি থাকে, তার দূষণ প্রতিরোধক্ষমতা তত বেশি। এছাড়াও প্রাণরাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চার প্রজাতির গাছের মধ্যে আমগাছের পাতায় অসকোরবিক অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেশি। যে গাছের পাতায় অসকোরবিক অ্যাসিড বেশি থাকে, সেই গাছের সালফার ডাই–অক্সাইডের দূষণ সহ্য করার ক্ষমতাও বেশি থাকে। মূলত বায়ুদূষণে যেখানে অনেক গাছ ঠিক মত বিকশিত হতে পারে না; সেখানে বায়ুদূষণেও সবল থাকে আমগাছ। আর বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানেই আম গাছ সহজেই বড় হতে পারে। দেশের সব ধরনের মাটিতেই আম গাছ জন্মাতে পারে। তাই প্রকৃতিতে আম গাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


আবার ফল হিসেবে আম আর আমগাছের মত এর পাতাতেও রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা। ভিটামিন, এনজাইম, অ্যান্টিঅক্সেডেন্ট ও খনিজ উপাদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে আম পাতায়। এই পাতায় থাকা মেঞ্জিফিরিন নামক একটি সক্রিয় উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। জানা যায়, শরীরের কোনও অংশে ক্ষত নিরাময়, কিডনি স্টোন ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে আমপাতা খুবই কার্যকরী। এছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আমপাতা ভেজষ ঔষধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও আমপাতার রয়েছে আরো অনেক ঔষধী গুণাগুণ।

 

সব মিলিয়ে আম গাছের মত এত উপকারী গাছ আমাদের আশপাশে খুব কমই আছে। যেই গাছ যেমন দেয় পুষ্টিকর আম, তেমনি তার পাতায়ও আছে না ঔষধীগুণ। আর শুধুমাত্র গাছ হিসেবেও পরিবেশে রয়েছে তার অনন্য অবদান।

- Advertisement -
spot_img

আলোচিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

ভিডিও