মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা, যা ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মহৎ প্রচেষ্টা। কোরবানি, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করার একটি মাধ্যম, মানুষের অন্তর পরিশুদ্ধ করে। কোরবানির মূল প্রেরণাই হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ।
কোরবানির পশুর মাংস ভাগ করার বিষয়ে ইসলামী শরীয়তে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। মহানবী (সা.) কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করতে বলেছেন: এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য, এক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের জন্য, এবং এক ভাগ অভাবী ও মিসকিনদের জন্য। হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুল (সা.) কোরবানির মাংস এভাবে ভাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কোরআনের সুরা হজ-এর আয়াত ৩৬-এ বলা হয়েছে:
“আর কাবার জন্য উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাধা অবস্থায় তাদের জবাই করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায়, তখন তা থেকে তোমরা আহার করো এবং আহার করাও; যে কিছু চায় না তাকে এবং যে চায় তাকেও। এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।” (সুরা হজ: আয়াত ৩৬)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কোরবানির মাংস মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভাগ নিজের জন্য, একটি আত্মীয়স্বজনদের জন্য যারা চায় না, এবং একটি ভাগ অভাবীদের জন্য, যারা চায় বা চায় না।
ইসলামী স্কলাররা সাধারণত এই তিন ভাগে ভাগ করাকে উত্তম এবং মুস্তাহাব বলেছেন। তবে কোরবানিদাতা ইচ্ছা করলে তিন ভাগে বিভক্ত করার পরিবর্তে নিজেদের ইচ্ছামতো ভাগ করতে পারেন বা সরাসরি প্রতিবেশী, আত্মীয় এবং গরিবদের মধ্যে বিতরণ করতে পারেন। এতে কোরবানির কোনো সমস্যা হয় না।
মুসলিমদের কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানির মাংস ভাগ করার তাওফিক দান করুন আল্লাহ। আমিন।