শুক্রবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫
25 C
Dhaka

কী আছে পবিত্র কাবা ঘরের ভিতরে ?

spot_img

ভিডিও

- Advertisement -

মুসলমানদের তীর্থস্থান এবং ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পানিসর্বস্ব পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি এ কাবাকে কেন্দ্র করেই। মক্কা ও কাবার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে ইব্রাহিম (আ.)-এর পদচিহ্ন-স্মৃতি। এছাড়াও কাবাঘর পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সুপ্রাচীন ঘর। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন,

নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা বাক্কায় (মক্কা নগরীতে) অবস্থিত।

(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬)


সৌদি আরবে অবস্থিত ইসলামে সবচেয়ে পবিত্র স্থান মাসজিদুল হারাম। এমনকি মসজিদুল হারাম এর কেন্দ্রেই রয়েছে কাবার অবস্থান। সৃষ্টির সূচনালঘ্ন থেকেই কখনো বন্ধ হয়নি কাবার তাওয়াফ। ঘড়ির কাটার বিপরীতে চলছে পবিত্র গৃহের প্রদক্ষিন কার্যক্রম। কাবা অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ অত্যন্ত বিরল। আনুষ্ঠানিক পরিচ্ছনতার জন্য বছরে মাত্র দুইবার খোলা হয় কাবার দরজা। তাছাড়া  মুসলিম বিশ্বের কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি মক্কায় গেলে তার সম্মানে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে খোলা হয় কাবা শরীফের দরজা। কেমন দেখতে ভেতরের দৃশ্য তাই নিয়ে তাই কৌতুহলের শেষ নেই। চলুন দেখে নেয়া যাক কাবার কিছু দুর্লব চিত্র, 


কালো রঙের পর্দায় ঢাকা থাকে পবিত্র কাবার ইমারত। উপরের আচ্ছাদন বা গিলাফকে বলা হয় কিসওয়া। জানলে অবাক হবেন একটি কিসওয়া তৈরিতে প্রয়োজন পড়ে ৬৭০ কেজি রেশম এবং ১৫ কেজি স্বর্ন। কিসওয়াতে ব্যবহৃত সিল্ক আসে ইতালি থেকে। জার্মানি থেকে আসে সোনা রূপা প্রলেপ দেয়া সুতা। খরচ হয় ৫০ কোটির ও বেশি।


নির্মানের সময় কাবার কোনো দরজা ছিলো না। ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায়  ছিলেন বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজ। তার আদেশে তৈরি হয় কাবা শরীফের বর্তমান দরজা। ১০ সেমি পুরুত্বের বিশ্বের সবচেয়ে দামি কাঠের তৈরি দরজায় ব্যবহার হয়েছে ২৮০ কেজি খাটি সোনা এবং খোদিত আছে পবিত্র কোরানের বিভিন্ন আয়াত। ইসলাম পূর্ব যুগ থেকে একই পরিবারের সদস্যরা পালন করে আসছেন কবার চাবি বহনের গুরুদায়িত্ব। কাবা অভ্যন্তরে একপাশে রয়েছে একটা স্বর্নের তৈরি দরজা বাবুত তাওবা, যার বাংলা অর্থ তাওবার দ্বার, যা দিয়ে যাওয়া যায় কাবার ছাদে। এমনকি শুরুতে কাবার ছিলো না কোনো ছাদ। কুরাইশ বংশের সংস্কারের সময় এতে ছাদ সংযুক্ত করা হয়। ইমারাত এর অবকাঠামো আরো মজবুত করতে এর পর যোগ করা হয় আরও বাড়তি একটি ছাদ।


কাবার ভেতরে রয়েছে আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের রাঃ আনহুর স্থাপিত তিনটি স্তম্ভ। যেগুলোকে পরবর্তীতে সুসজ্জিত করা হয়েছে স্বর্নখচিত ডিজাইনে। খুটি তিনটির সাথে ঝুলানো আছে বিভিন্ন প্রদীপ দান যা ইতিহাসের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশারা পবিত্র কাবা শরিফের জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। সবুজ এবং সাদা মার্বেল পাথরে আবৃত কাবা ঘরের ভেতরের দেয়াল।


রয়েছে সুগন্ধি রাখার জন্য একটি বহুমূল্য বাক্স। দেয়ালে আছে বিভিন্ন সময়ে কাবা সংস্কারে বাদশাহ দের ভূমিকা ও কাজের ফিরিস্তি।


এমনকি কাবা গৃহের অভ্যন্তরে চিহ্নিত আছে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নামাযের জায়গা। তার পাশের দেয়ালেই মার্বেল পাথরের উপর হুত্তুল কুহফি বা কুহফি  বর্নমালায় অংকিত আছে কালেমার ক্যালিগ্রাফি।


তাছাড়া কাবা পরিষ্কারের জন্য সাধারণত  জমজমের পানি, খাঁটি গোলাপজল,  উন্নতমানের সুগন্ধি ‘উদ’ এবং কস্তুরি ব্যবহার করা হয়। সর্বপ্রথম গোলাপের সুগন্ধিযুক্ত জমজমের পানি ঢালা হয় মেঝেতে। তারপর পরিস্কার করা হয় খালি হাতে খেজুরপাতা দিয়ে। সবশেষে দেয়াল এবং মেঝে মোছা হয় কোমল সাদা কাপড় এবং উন্নত মানের টিস্যু দিয়ে।


অতীতে সপ্তাহে দুইবার খোলা হলেও এখন সে সম্ভাবনা একদমই নেই। এমনকি বছরে যে দুইবার খোলা হয় তাও হয় মাত্র দুইঘন্টার জন্য এবং  সে সময় কাবা ঘরের চারপাশে অবস্থান করেন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা।


আর তাই কাবার সৌন্দর্য দেখার জন্য ভার্চুয়াল ভ্রমণেই সন্তষ্ট থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

- Advertisement -
spot_img

আলোচিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

ভিডিও