…one should never be Where one does not belong বব ডিলানের এই কথাটা আপনারা সবাই সারা জীবন মনে রেখেন। বাংলাদেশের সফল মানুষদের ৯০ ভাগ এই ভুলটা করেন। যা আপনার কাজ না এবং যা আপনি জানেনও না কীভাবে করতে হয় – সেই কাজটা যতো সহজই মনে হোক – করতে যেয়েন না। একান্তই যদি করণীয় মনে করেন – শেখার জন্য যথেষ্ট সময় নিয়েন (যা সফল হয়ে যাওয়ার পর ম্যানেজ করা প্রায় অসম্ভব)। এই জায়গায় গেলে আপনার সব দুর্বলতা এক সাথে প্রকাশ পাবে।
সব জাতি, সব গোত্রের মানুষেরা তাবিজ, ট্যালিজম্যান জাতীয় কিছু পরে (যেমন ফ্যাশিজমের তাবিজ হোলো রুবানা হক, মাহফুজ আনাম, আনিসুল হক, BRAC এর পরিচালনা পরিষদ – ইত্যাদি।)। তাবিজের লক্ষ্য হোলো সৌভাগ্য আনা কিংবা দুর্ভাগ্য ঠেকানো। তাবিজ কিন্তু দৈত্যকে মেরে ফেলার ইচ্ছা বা ষড়যন্ত্র করে না। কী করে? যেন আপনি দৈত্যের খপ্পরে না পড়েন। দৈত্য, দৈত্যই থাকুক – শুধু আপনি যেন তার থেকে দূরে থাকতে পারেন। কারণ দৈত্যের খপ্পরে পড়লে আপনার সব ভালনারাবিলিটি একসাথে বেরিয়ে আসবে। আপনি সুটকেস গুছিয়ে, হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যাবেন – না হলে গোমাসা হবে। সবাই জানবে – আপনি দুনিয়া না, বাংলাদেশ না, ঢাকাও না – কেবল নুনুডাঙ্গা গ্রামের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছিলেন। সেই ভালনারেবিলিটির বিরুদ্ধে তাবিজ হোলো রুবানা হক, মাহফুজ আনাম – যারা ফ্যাশিজমকে মোহময় করে রাখে।
ডালিমকুমার কিন্তু তাবিজ পরে না। কারণ তার আছে তলোয়ার। রাজকন্যার নাক থেকে বেরিয়ে আসা সুতার মতো সাপটি অতিকায় অজগরে পরিণত হলে ডালিমকুমার বলে যে আমি যদি নিষ্পাপ হই তবে আমার এই তলোয়ার তোমাকে ছোঁবে। ডালিমকুমারের শক্তি হোলো তার তলোয়ার আর তার নিষ্পাপ হওয়াটা। তাই ডালিমকুমারের তাবিজের দরকার হয় না।
তাবিজ আসলে আপনি দৈত্যের জন্য পরেন না – আপনার নিজের ভালনারেবিলিটির বিরুদ্ধে পরেন। যাকগে বাংলাদেশের ছাত্র-আন্দোলনের ছেলেমেয়েরা (সমন্বয়করা) – খুবই বিশ্রীভাবে জীবনের এই কঠিন শিক্ষাটি শিখবেন
পত্রিকায় এসেছে যে সমন্বয়ক দাবী করে সচিবালয়ে গিয়ে পদায়ন ঠিক করছে কে কোন পদে যাবে। এগুলো ভয়ঙ্কর লক্ষণ। আমি নিশ্চিত যে আপনাদের মাথায় শুভাকাঙ্ক্ষাই আছে। কিন্তু মনে রাখবেন দোজখ এমন একটা জায়গা যেটা মূলত শুভাকাঙ্ক্ষারই বীজতলা। ইবলিসের মনেও শুভাকাঙ্ক্ষাই ছিলো – খোদার জন্য। কী দরকার খোদা তোমার এই মানবজাতি সৃষ্টি করার? আমরা কি যথেষ্ট না?
আপনারা রাজনীতি করবেন না কিন্তু ক্ষমতার ব্যবহার করবেন। এই যে রেস্পন্সিবিলিটি ব্যতিরেকে অথরিটির কামনা – এই শুভাকাঙ্ক্ষা থেকেই দুনিয়া, দোজখে পরিণত হয়।
আপনারা বিপ্লব করেন নাই কিন্তু বিপ্লবীদের আচারকে এপ্রোপ্রিয়েশান করছেন। যেটা আপনারা বুঝতে পারছেন না যে কালকে এই প্রশাসনের প্রতিটি ব্যর্থতা আপনাদের ওপর পড়বে। জীবনে আপনারা কোনো লার্জ অর্গানাইজেশানে চাকরি করেন নাই। লার্জ অর্গানাইজেশানের একটা আলাদা ইকো-সিস্টেম আছে যেটা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। যেটা আপনারা করতে পারবেন সেটা হোলো ও আওয়ামী বলে পদায়ন করা যাবে না। আপনাদের অর্ধেক কথা শোনা হবে না কারণ কোনো অভিজ্ঞতাই আপনাদের নাই যে একটা লার্জ অর্গানাইজেশান যার লক্ষ্য টাকা বানানো না বরং কীভাবে টাকা খরচ করা যায় – কীভাবে চলে। দেখলে মনে হবে যে আওলিয়ার মেলা কিন্তু ভেতরে গিয়ে দেখবেন যে চুতিয়ার মেলা – এমন জায়গায় জীবনে কোনোদিন গিয়েছেন? গেলেও বা চাকরি করেছেন?
কিন্তু যেহেতু আপনারা এই কাজে নেমেছেন – দুদে আমলারা সব ব্যর্থতা আপনাদের ওপর চাপাবে। দোষ চাপানোর তিরিশ বছরের সুচারু অভিজ্ঞতার সাথে আপনি পারবেন না। যেই সন্তান আপনার না, যেই মেয়ের সাথে আপনি এমন কি য়েও করেন নি – সেই সন্তানের খরপোশ চিরকাল আপনাদের বয়ে বেড়াতে হবে। (ডিপজল, এলেন শফন ও মিথিলা দূরে থেকে হাসবে – জিজ্ঞেশ করবে – পারবা?) তার ওপর যেভাবে আপনারা ডানে-বামে শত্রু বানাচ্ছেন, খুব শিগ্রী বুঝবেন যে আপনাদের পেছনে কেউ নাই। চান বা না চান – বিএনপি ও জামায়াত এই দেশের অন্তত অর্ধেক মানুষকে রেপ্রেজেন্ট করে। এটা রিয়ালিটি। রাজনৈতিক দল না করে, জনসমর্থন আদায় না করেই আপনারা যদি এই অর্ধেক অংশকে শত্রু বানান – এই ভার আপনারা নিতে পারবেন না। ভার্জিন ছেলেদের অনেক আত্মবিশ্বাস অমূলক প্রমাণিত হয় – এটা সমস্যার না। কিন্তু তারা যা ঘন্টা ও মিনিটের আঁতাতটা ঠিক কোথায় এটাই জানতো না – এই অজ্ঞতার ওজন খুব ভারী পড়ে যায়। গভীরে হানা দেয়। ভার্জিনিটি এমনই এক প্রহেলিকা।
যদি আপনারা পিনাকী, ইলিয়াস, সামি, জাহেদ ভাইয়ের মতো এক্টিভিস্ট থাকতেন – সবাইকে শত্রু বানানোটা আপনারা এফোর্ড করতে পারতেন। কিন্তু আপনারা এক ধাপ ওপরে গিয়েছেন। স্বেচ্ছায় গিয়েছেন। কিন্তু ঐখানে আপনারা থাকতে চান কোনো রেস্পন্সিবিলিটি ছাড়া। এইখানে ক্ষমতাধর মানুষরা আপনার শত্রু হবেই হবে। জায়গাটাই এমন। মাত্র ২ মাস আগে যে মনে হয়েছিলো যে সমন্বয়করা সব আত্মার আত্মীয় – ২ মাস পরেই বুঝবেন যে আগের সম্পর্ক আর নাই। মনে হবে যে এ বোকাচোদা, ও ক্ষমতালোভী, এ বিএনপি ও আওয়ামী লীগ।
এই সরকার ততোটা শক্ত ভিত্তিতে নাই যতোটা আপনারা মনে করছেন। পুরা বাংলাদেশ আপনাদেরকে রেস্পেক্ট দিয়েছে – যেটা এনক্যাশ করেন না। রেস্পেক্ট এমন একটা কারেন্সি যার এক্সচেঞ্জ রেইট খুবই খারাপ। ১ কোটি টাকার রেস্পেক্টের বদলে আপনি যদি ১’শ টাকার সুবিধা এক্সচেঞ্জ করেন – সবাই মনে করে যে শোধবোধ হয়ে গেছে।
যদি আপনাদের মনে হয় যে এই দেশের সব ফিউচার ডিসিশানে আপনারা একাট্টাভাবে পার্টিসিপেট করবেন – তাহলে রাজনৈতিক দল তৈরী করেন এবং অন্যান্য দলের মতো আচরণ শুরু করেন। আগেও বলেছি, এখনো বলছি – আপনাদের হিউজ এডভ্যান্টেজ আছে। শুরুই করবেন অন্তত ১৫% ভোট নিয়ে। যদি ব্যক্তি হিসেবে পার্টিসিপেট করতে চান – তাহলে বিএনপি, জামাত কিংবা অন্য দলে যোগ দেন। আর যদি রাজনৈতিক দল না করেন – তাহলে তিন জন বাদে কেউ সরাসরি সরকারী কাজে নাক গলায়েন না। জনসমর্থন খুবই ঠুনকো জিনিস। যেই জাতির মধ্যে একবার ফ্যাশিজম আসে – সেই জাতির জনসমর্থনের ওপর আস্থা রেখেন না। এমন ঘনঘোর সত্য অতর্কিতে বুঝতে যেয়েন না। আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে , কিন্তু পাছা বিক্ষত হয়ে গেছে।
আমি জানি না, চিনি না নুরুকে। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক মানুষের সাথে কথার প্রসঙ্গে নুরুর কথা এসেছে। সত্য-মিথ্যা জানি না কিন্তু উইদাউট এক্সেপশান সবাই নুরুকে বাটপার মনে করে। আওয়ামী লীগ – বিএনপি – জামাত এভরিওয়ান। এই ছেলেটা কিন্তু ৬/৭ বছর আগে এই অবস্থায় ছিলো না। আমি আল্লাহর কাছে সত্যিই দোয়া করি যেন আপনাদের এই অবস্থায় না আসতে হয়।
(ফাহাম আবদুস সালামের ফেসবুক থেকে নেওয়া)