শুক্রবার, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫
19 C
Dhaka

বাঙ্গালীর মাতৃভাষার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে?

spot_img

ভিডিও

- Advertisement -

এই পৃথিবীতে কোন শাসন ব্যবস্থাই চিরস্থায়ী ছিল না, যা শুরু হয়েছিল তার শেষ কোন না কোন ভাবে হয়েছেই।তবে ভারতীয় উপমহাদেশে বাঙালি জাতির ইতিহাস হলো আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস।ব্রিটিশরা বিতাড়িত হওয়ার সাথে সাথে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত পাকিস্তান নামে দুইটি দেশ গঠন করে দিয়ে যায়। এই  পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর এর দুটি অংশের মাঝে ধর্মের মিল ছাড়া অন্যকোনো মিল ছিল না। তাদের বিশাল ভৌগলিক দূরত্বের পাশাপাশি ছিলো সংস্কৃতির পার্থক্য।

 

পাকিস্তান গঠন এর শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর অনুদার দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায় সব ক্ষেত্রে এবং তাদের জাতির জনক বলে খ্যাত মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ পূর্ব পাকিস্তানকে তার ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে আঘাত হানেন সর্বপ্রথম আমাদের ভাষার উপর। কিন্তু পুরো পাকিস্তানে তখন বাঙালিরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ ,এমনকি পশ্চিম পাকিস্তানেরও প্রায় ২৪ ভাগ মানুষ কথা বলতো বাংলায়। এই  ১৯৪৭ থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন ১৯৫২ সালে চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। বাংলার ইতিহাসে পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে এটাই ছিল বাঙালি জাতির প্রথম বিদ্রোহ।

 

কিন্তু আমরা যদি ইতিহাস দেখি পৃথিবীর অনেক দেশেরই নিজেদের ভাষা নেই। অন্য দেশের ভাষায় তারা কথা বলে। আমরা যদি ব্রাজিল এর ইতিহাসই দেখি প্রায় ৩০০ বছর তাদের শাসন করেছিল পর্তুগীজরা। এত শোষিত হওয়ার পরও তারা কিন্তু এখনো পর্তুগীজ ভাষাতেই কথা বলে। তাদের নেই নিজস্ব ভাষা। তাহলে একটা প্রশ্ন দাঁড়ায় বাঙালিরা কিভাবে একটা নিজের ভাষা, মাতৃভাষার অনুপ্রেরণা পেয়েছিল? বাঙ্গালিরা তো চাইলেই উর্দু ভাষাকে নিজেদের ভেতর লালন করতে পারত। কিন্তু কেনো করলো না?

 

এক্ষেত্রে একটা কথা না বললেই না, পাকিস্তানিরা ছিলো কট্টর মুসলিম আর বাংলাদেশের জনগণ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল অনেক সাম্প্রদায়িক। বাঙালিরা বিশ্বাস করতো ধর্মনিরপেক্ষতাতে। এই বিশ্বাসের পেছনে অবশ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালিদের প্রভাব অনেক বেশি ছিলো। আমাদের সাহিত্য ছিলো তখনকার সময়ে পুরোটাই কলকাতা নির্ভর।আর সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক কারনে কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা সবসময় চাইতো বাংলাই হোক আমাদের ভাষা। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে পাকিস্তানিদের আমাদের উপর করা শোষণ, অত্যাচার, এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করবে বলে যে ধানাই পানাই তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিরা করেছিলো তাই পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার বীজবপন করে এবং এটা পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ পতনের পথ প্রশস্ত করে। 

 

এরই মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ চলতে থাকে এবং ১৯৫২ তে গিয়ে ভাষা আন্দোলনে বাঙালি সফল হয়।  এবং বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয়।সেই সাথে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। 

- Advertisement -
spot_img

আলোচিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

ভিডিও