মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরা আটক করেছেন বলে একটি খবর ছড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো এই খবর সঠিক নয় বলে আজ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
জান্তাপ্রধান আটক হওয়ার খবরটি ‘অপপ্রচার’ উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
রাষ্ট্রপ্রধান ও কর্তৃপক্ষ ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। জান্তাপ্রধানের আটকের খবর যাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন, বিবৃতিতে তাঁদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটিতে দাবি করা হয়, জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে রাজধানী নেপিডোতে আটক করেছেন শীর্ষ জেনারেলরা। জান্তার শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব পরিবর্তন করতে তাঁকে আটক করা হয়েছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে সম্প্রতি কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। এতে সমর্থকদের পক্ষ থেকে কিছুদিন ধরে সমালোচনার মুখে রয়েছে সেনাবাহিনী।
বুধবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমারে আসার কথা রয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি মিয়ানমারে পৌঁছান কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সফরে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
চীন মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অন্যতম বড় সমর্থক। দেশটি জান্তাকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, চীন নিজেদের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গেও সম্পর্ক রাখে।
গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট শান রাজ্যে উত্তর দিকের কিছু অঞ্চল দখলে নিয়েছে। শান রাজ্যের সঙ্গে চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্ত রয়েছে।
শান রাজ্যের যে ভূখণ্ড সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দখলে নিয়েছে, তার মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাশিও শহরের সামরিক কমান্ডও রয়েছে। শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো আঞ্চলিক কমান্ড বেহাত হওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা। সামরিক কমান্ডটি হাতছাড়া হওয়ার পর জনগণের মধ্যে জান্তার প্রতি সহানুভূতিশীল অংশও শীর্ষ জেনারেলদের সমালোচনা করছেন।
চীনের শীর্ষ কোনো কর্মকর্তা হিসেবে গত মে মাসে মিয়ানমার সফর করেছিলেন দেশটির তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংগ। তখন তিনি জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
মিয়ানমার সেনবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমার সফরকারী চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ক্ষমতাচ্যুত ও আটক গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করবেন না।