শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫
22.8 C
Dhaka

রাষ্ট্রপতি পদে সরাসরি নির্বাচন আসছে আলোচনায়

spot_img

ভিডিও

- Advertisement -

বিভিন্ন মহল থেকে সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার সুপারিশ এসেছে। প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। গত অক্টোবরে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন হওয়ার পর তারা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে সুপারিশ নিচ্ছে।


অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে সরাসরি নির্বাচনের সুপারিশ উঠে আসছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে ফের কি তবে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থায় যেতে হবে, নাকি সংসদীয় পদ্ধতির মধ্যে থেকেই পাশাপাশি হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।


এদিকে গণমাধ্যম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, নাগরিক সমাজ, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী সমাজ ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে৷ এছাড়া বিভিন্ন দল ও জনগণের কাছেও সুপারিশ আহ্বান করেছে ওই কমিশন।


বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব সর্বময়। আর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেবল সরকারের আদেশগুলো সই করে কার্যকর করার মধ্যেই সীমিত। এতে রাষ্ট্রের শীর্ষ দুই পদের ক্ষমতার ভারসাম্য নীতি কাজ করছে না। রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের শাসন উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। তাই ওই দুই পদের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনাই এই আলোচনার উদ্দেশ্য।


নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সূত্র বলছে, সরাসরি নির্বাচনের এই আলোচনায় রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে একেবারে নির্দলীয় হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে কিছু ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে৷ তবেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আসবে।


বর্তমানে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, এতে জাতীয় সংসদ সদস্যরা ভোট দেন, তারাই প্রার্থী মনোনয়ন করেন৷ এতে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ট দলের প্রার্থীই নির্বাচিত হন। ফলে সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান একই দলের ব্যক্তি হন। তাই জাতীয় সংসদ ও সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হতে পারে। কিংবা সরাসরি পদটিতে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে এ নির্বাচন হতে পারে। এতে বিরোধী দলের প্রার্থীও পদটিতে আসীন হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।


অন্যদিকে নির্দলীয় ব্যক্তিকে যদি রাষ্ট্রপতি করা যায় সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে, তবে পাঁচ বছর পরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। যার অধীনে সংসদ নির্বাচনে যেতে কারও কোনো অসুবিধা থাকবে না বলেও সুপারিশে ওঠে আসছে।


স্বাধীনতার পর সংসদীয় পদ্ধতিতে নির্বাচন হলেও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকে৷ সে সময় গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতন হলে ১৯৯১ সালে ফের সংসদীয় ব্যবস্থা চালু হয়। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পদ একচ্ছত্র ক্ষমতা পায়।


সংসদে ফ্লোর ক্রসিংয়ে (দলের বিপক্ষে ভোট) গেলে পদ হারানোর বিধান থাকায় প্রধানমন্ত্রী মূলত আইনগতভাবে এক নায়কে পরিণত হন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেবল সরকারি সিদ্ধান্তে সই করার মধ্যে সীমিত হয়ে যায়। তাই সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় সরাসরি নির্বাচনকে সামনে আনছে সচেতন মহল। সংস্কার উদ্যোগ একটি সুযোগ এনে দিয়েছে বলেও মনে করছেন তারা।


নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের জন্য অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অতীতে যত অন্যায়, বৈষ্যম করা হয়েছে, তা দূর করার। এমন একটা দেশ গড়তে চাই যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে। যেই চেতনা থেকে আন্দোলন হয়েছে সেই চেতনার ভিত্তিতেই আমরা পরিচালিত হতে চাই।

- Advertisement -
spot_img

আলোচিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

ভিডিও