মুক্তিযুদ্ধ সংগঠন ও পরিচালনা
৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাঙালিদের নিয়ে পাল্টা বিভিন্ন বাহিনী গড়ে । এদের মধ্যে ছিল কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-যুবক, নারী, পুলিশ, আনসার, ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস), বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও অন্যদের নিয়ে গঠিত বিশাল মুক্তিবাহিনী, প্রধানত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষিত তরুণদের নিয়ে গঠিত বেঙ্গল লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী), নৌকমান্ডো ইত্যাদি।
একপর্যায়ে পেশাদার সৈন্যদের নিয়ে নিয়মিত স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী গঠিত হয়। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে ব্যক্তি উদ্যোগে আরও বেশ কিছু বাহিনী গড়ে ওঠে, যার মধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নেতৃত্বাধীন বাহিনী (যা কাদেরিয়া বাহিনী নামে খ্যাত) বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক (Supreme Commander) ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কর্নেল (পরে জেনারেল) এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়।
সুষ্ঠ ও সুশৃঙ্খলভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে এবং প্রত্যেক সেক্টরকে কয়েকটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ ও মেজর কে এম সফিউল্লাহ যথাক্রমে এক, দুই ও তিন নম্বর সেক্টর কমান্ডার এবং ‘জেড’, ‘কে’ ও ‘এস ফোর্স’-এর প্রধান ছিলেন। মুক্তিবাহিনী, মুজিব বাহিনীর সদস্যদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্থাপিত প্রশিক্ষণ শিবিরে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়।